What Will Happen If Bank Get Close : বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক উত্তেজনা, আর্থিক মন্দা, অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি, সরকারের নীতি পরিবর্তনের কারণে তৈরি হয় অর্থনৈতিক সংকট। এতে দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক রাতারাতি দেউলিয়া হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় গ্রাহকদের। ব্যাংক দেউলিয়া (Bankrupt) হয়ে গেলে গ্রাহকদের সঞ্চিত অর্থ কি হয়? আদৌ কি গ্রাহক তার অর্থ ফেরত পায়? ব্যাংকের তরফ থেকে ঠিক কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়? সবটাই জানব আজকের প্রতিবেদনে।
কীভাবে ফেরত পাবেন টাকা?
কোন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে গ্রাহকদের যাতে আর্থিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্য ১৯৭৮ সালে চালু করা হয় ডিপোজিট ইন্সুরেন্স এবং ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন। কোন ব্যাংক যদি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে DICGC গ্রাহকদের সঞ্চিত অর্থের কিছু অংশ ফেরত দেয়। কিভাবে এই প্রক্রিয়া চলে, কত টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, জানুন।
সর্বোচ্চ কত টাকা ফেরত দেওয়া হয়?
ডিআইসিজিসি দ্বারা প্রদত্ত বীমা কভারেজের কারণে সেভিংস, ফিক্সড ডিপোজিট, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং রেকারিং কিছুটা নিরাপদে থাকে। কোন ব্যাংক যদি দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে গ্রাহকরা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ ফেরত পাবেন। একই ব্যাংকের যদি বিভিন্ন শাখায় অ্যাকাউন্ট থাকে, সেক্ষেত্রে সমস্ত অর্থের পরিমাণ একত্রিত করে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হয় গ্রাহকদের।
কীভাবে পাবেন ১০ লক্ষ টাকা?
তবে ৫ লক্ষ টাকা নয়, আপনি ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ ফেরত পেতে পারেন ব্যাংক থেকে। যদি কোন ব্যাংকে আপনি নিজের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন, অন্য একটি অ্যাকাউন্টে যদি স্বামী বা পিতার সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনি পেতে পারেন ১০ লক্ষ টাকা। জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ছাড়াও আপনি যদি আপনার সন্তানের অভিভাবক হিসাবে বা কোন কোম্পানির পরিচালক হিসেবে অ্যাকাউন্ট খোলেন সেক্ষেত্রেও আপনি ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফেরত পাবেন।
১০ লক্ষ টাকা দাবি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি যখন একটি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খুলছেন তখন নামগুলি যদি পরপর থাকে তাহলে কিন্তু আপনি ৫ লক্ষ টাকাই পাবেন। ধরুন, রাম, শ্যাম, যদু এই ৩ জন একটি ব্যাংকের দুটি শাখায় জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খুলেছে। দুটি অ্যাকাউন্টেই যদি রাম, শ্যাম, যদু এই নাম তিনটি পর পর থাকে তাহলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে। ১০ লক্ষ টাকা পাওয়ার জন্য একটি অ্যাকাউন্টে রাম শ্যাম যদু এবং অন্য অ্যাকাউন্টে যদু,শ্যাম রাম, এইভাবে নাম রাখতে হবে।
কোন কোন আমানত DICGC দ্বারা বিমাকৃত
ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেলে যেগুলি বীমা কভারেজের মধ্যে থাকে সেগুলি হল, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট সেভিংস, সেভিংস অ্যাকাউন্ট ডিপোজিট, ফিক্সড ডিপোজিট ও রেকারিং ডিপোজিট। যেগুলি ডিআইসিজিসি দ্বারা বিমাকৃত নয় সেগুলি হল, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আমানত, বিদেশি সরকারের আমানত, আন্ত:ব্যাঙ্ক আমানত, রাষ্ট্রীয় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংক গুলির আমানত, ভারতের বাইরে প্রাপ্ত কোন আমানতের যেকোনো পরিমাণ বকেয়া, যা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পূর্ববর্তী অনুমোদনে ডি আই সিজিসি দ্বারা বিশেষভাবে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : FD -তে সুদের হার বাড়ালো এই ৭ ব্যাঙ্ক, জেনে নিন কোন ব্যাঙ্ক কত বেশি টাকা দেবে
কোন পরিস্থিতিতে অর্থ প্রদান করতে দায়বদ্ধ DICGC?
ডিআইসিজিসি গ্রাহকদের বীমার পরিমাণ পরিশোধে তখনি দায়বদ্ধ থাকে যখন একটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায়, কোন কারনে বিমাকৃত ব্যাংকের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়, একটি ব্যাংক যখন অন্য একটি ব্যাংকের সঙ্গে একইভুতকরণ হয়। তবে একজন গ্রাহক হিসাবে এই অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য কোন প্রিমিয়াম দিতে হয় না। ব্যাংকগুলি যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন DICGC গ্রাহকদের অর্থ প্রদান করতে দায়বদ্ধ থাকে।
আরও পড়ুন : আর টাকা তোলা যাবে না পুরনো এই পদ্ধতিতে! গ্রাহকদের নতুন নির্দেশ দিল RBI
কীভাবে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয় DICGC?
DICGC তিনটি পর্যায়ে গ্রাহকদের আমানত ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করে। প্রথমে ব্যাংক সমস্ত আমানতের একটি দাবি তালিকা তৈরি করে এবং পাঠিয়ে দেয় DICGC কে। এই তালিকায় প্রতিটি আমানতকারীর নাম এবং ঠিকানা ছাড়াও থাকে মূল অর্থ অর্থ এবং সুদের পরিমাণ। দ্বিতীয় পদক্ষেপে ব্যাংক গ্রাহকদের স্বাক্ষর করা সম্মতি সূচক ফর্মগুলি পাঠিয়ে দেয় DICGCকে। ৯০ দিনের মধ্যে যদি কোন গ্রাহক সম্মতি সূচক স্বাক্ষর করতে ব্যর্থ হন তাহলে পরে আর তিনি কোন অর্থ দাবি করতে পারবেন না। শেষ পর্যায়ে DICGC গ্রাহকদের তাদের অর্থের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বকেয়া কভারেজের পরিমাণ বিতরণ করে। মনে রাখবেন, শুধুমাত্র ভারতের বাণিজ্যিক এবং সমবায় ব্যাংকগুলি DICGC – এর আওতায় আসে।