Ayodha Ram Mandir : অপেক্ষার দিন প্রায় শেষ। আগামী ২২ শে জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হবে রাম মন্দির (Ram Mandir Inauguration)। প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে রামলালার (Ram Lala) মূর্তিতে। অযোধ্যার মন্দির নিয়ে সকলে অবগত হলেও অনেকেই জানেন না রামলালার মূর্তি তৈরি করেছেন কে? কিভাবেই বা তৈরি হলো এত অপূর্ব মূর্তি? কেন এই মূর্তিটাকে বেছে নেওয়া হলো রাম মন্দিরের (Ram Mandir) জন্য?
একটি নয় বরং তিনটি রামলালার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে মন্দিরের জন্য
পদ্ম ফুলের উপর খেলা করছে পাঁচ বছরের বালক, মুখে স্মিত হাসি, এক হাতে তির অন্য হাতে ধনুক। মূর্তিটি দেখলেই একটা আলাদা ভক্তি ভাব আসে মনে। রাম লালার এই মূর্তিটি বানিয়েছেন মাইসুরের অরুণ যোগীরাজ। তবে মোট ৩ টি মূর্তি বানাতে দেওয়া হয়েছিল মন্দিরের জন্য। মূর্তি তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হয় তিন ভাস্করকে। যারা হলেন বেঙ্গালুরুর ভাস্কর গণেশ ভাট এবং তার ছাত্র বিপিন ভাদোরিয়া, মাইসুরের অরুণ যোগীরাজ এবং জয়পুরের সত্যনারায়ণ পান্ডে।
মন্দিরের গর্ভগৃহের জন্য বেছে নেওয়া হয় অরুণ যোগীরাজের মূর্তিটিকে
এই তিন ভাস্করের তৈরি তিনটি মূর্তিই তৈরি হয়েছে নারায়ণ শিলা দিয়ে। তবে এই তিনটি মূর্তির মধ্যে যে কোনো একটি মূর্তি স্থান পাবে গর্ভগৃহে, এমন কথা আগে থেকেই জানানো হয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে। বাকি দুটিও মন্দিরের অন্য তলে স্থান পাবে। অবশেষে অরুণ যোগীরাজের তৈরি মূর্তিটিকে বেছে নেওয়া হয় গর্ভগৃহে রাখার জন্য। খবরটি শোনার পর থেকেই আনন্দে আপ্লুত অরুণ।
কে এই অরুণ যোগীরাজ?
অরুণ যোগীরাজ হলেন কর্নাটকের বিখ্যাত ভাস্কর পরিবারের সন্তান। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অরুণের খোদাই করা মূর্তি রয়েছে। অরুণের পিতামহ বাসভন্ন শিল্পী মহীশূরের রাজার সুরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। অরুণও ছোটবেলা থেকে ভাস্কর্য কাজের সঙ্গেই যুক্ত। কিছুদিন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করার পর ২০০৮ সালে সবকিছু ছেড়ে ভাস্কর্য শিল্পী হিসেবে পথ চলা শুরু করেন তিনি।
রামলালার মূর্তি ছাড়া আর কী কী তৈরি করেছেন অরুণ?
কর্নাটকের এই ভাস্কর্য শিল্পী নতুন দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের পিছন দিকে স্থাপিত ৩০ ফুটের নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি তৈরি করেছেন। এছাড়াও দু ফুটের একটি নেতাজি মূর্তি তৈরি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী অরুণের ভাস্কর্য দেখে আপ্লুত হন। এছাড়াও কেদারনাথের আদি শঙ্করাচার্যের ১২ ফুটের একটি মূর্তি এবং মাইসুরে একটি ২১ ফুটের হনুমানের মূর্তি নির্মাণ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন : রামমন্দিরের জয়জয়কার করছেন এই পাকিস্তানি ক্রিকেটার, পাঠালেন শুভেচ্ছা বার্তা
কীভাবে তৈরি হল রামলালার মূর্তি?
রামলালার মূর্তিটি তৈরি করতে টানা ৬ মাস সময় নিয়েছেন অরুণ। বাড়ির চারিপাশে চার-পাঁচ বছরের বাচ্চাদের ঘন্টার পর ঘন্টা খুঁটিয়ে দেখতেন তিনি। যদিও ট্রাস্টি বোর্ড আগে থেকেই বিগ্রহ কেমন দেখতে হবে, তার আভাস দিয়ে রেখেছিলেন। ২০০০-এরও বেশি ফটোগ্রাফ নিয়ে গবেষণা করার পর অবশেষে টানা ৬ মাসের কঠোর পরিশ্রমের পর তিনি তৈরি করতে পেরেছিলেন রামলালার মূর্তি। ওই ৬ মাস সাত্ত্বিক আহার করতেন অরুণ, সপরিবারে অযোধ্যায় গিয়ে দুবার প্রার্থনা করে আসতেন। অরুণ হয়তো একদিন এই পৃথিবী থেকে চলে যাবেন কিন্তু তার ভাস্কর্য যে ইতিহাস তৈরি করল, সারা জীবন থেকে যাবে সেটা।
আরও পড়ুন : ২২ শে জানুয়ারি দেশে সরকারি ছুটি থাকবে? পশ্চিমবঙ্গে ছুটি থাকবে রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনে?
রাম মন্দির উদ্বোধনের আগেই অরুণ পেলেন উপহার
প্রসঙ্গত, অরুনের খোদাই করা রামলালার মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগেই তিনি পেলেন একটি উপহার। মাইসুরের সব থেকে বড় মিষ্টির দোকান থেকে শিল্পীকে সম্মান জানানোর জন্য একটি বিরাট বড় মিষ্টি উপহার দেওয়া হয়েছে শিল্পীকে। তবে এটি সাধারণ কোনো মিষ্টি নয়। মিষ্টি দিয়ে শিল্পীকে একটি গোটা রাম মন্দির বানিয়ে দিয়েছেন তারা। উপহার পেয়ে ভীষণ আপ্লুত অরুণ।