বছরের শেষ মাস, কোথায় সবাই শীতের আমেজে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াবে তা নয়, হঠাৎ করে একটি ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানিতে এখন সকলেই ভয়ে কাঁপছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে যে সুন্দর আবহাওয়া ছিল তা হঠাৎ করেই গেছে পাল্টে। চলুন আমরা জেনে নিই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটা পড়বে বাংলায়? বৃষ্টির কতটা আশঙ্কা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গ সহ সারা পশ্চিমবঙ্গে?
আবহাওয়া দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, আন্দামান সাগরে যে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছে তা ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রবিবার এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাবে উত্তর-পশ্চিম দিকে। ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করেছে মায়নামার। মিগজাউম, নামের এই ঘূর্ণিঝড়টি আসার আগেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তর তামিলনাড়ু, উড়িষ্য এবং অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব দক্ষিণ ভারতে পড়লেও বাংলায় সেইভাবে বৃষ্টিপাত হবে না। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত না হলেও যে শীত এসেছিল পশ্চিমবঙ্গে, সেটি আপাতত থমকে গেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আপাতত শীতের কোন নাম গন্ধ থাকবে না পশ্চিমবঙ্গে, উল্টে তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি বেশি থাকবে বলেই মনে করছেন আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে উত্তাল হবে সমুদ্র। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার থাকবে প্রতি ঘন্টায়। কখনো কখনো তা ১০০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বাংলার উপর সরাসরি প্রভাব না, পড়লেও পরোক্ষ প্রভাব পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়ের। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী মঙ্গলবার এবং বুধবার দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হতে পারে।
বৃষ্টিপাত হতে পারে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং কলকাতা সংলগ্ন সমস্ত জেলায়। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হলেও উত্তরবঙ্গে আপাতত থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া। শীতের আমেজ থাকবে না উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে কালিম্পং এবং দার্জিলিঙে। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে আপাতত থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া।
আরও পড়ুন : প্রতিমাসে ঢুকবে মোটা টাকা, গুগলের এই অ্যাপ ব্যবহার করে শুরু করুন রোজগার
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তেমন কোন সমস্যা না হলেও আপাতত শীতের আমেজ থেকে বঞ্চিত হতে হবে পশ্চিমবঙ্গ বাসীকে। এদিন কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। যে সময় আমাদের লেপ কম্বল মুড়ি দেওয়া উচিত সেখানে অনায়াসে হালকা জামা কাপড় পরে ঘুরে বেড়াচ্ছি আমরা। তবে ঘূর্ণিঝড়টি বিদায় নিলেই আমাদের পশ্চিমবঙ্গে চলে আসবে বহু অপেক্ষিত শীতকাল।
আরও পড়ুন : পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় দার্জিলিং তৈরি করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জানুন কোথায় হবে