এখনো আমাদের সমাজে মেয়েদের জন্ম হওয়া মানে বাবা-মায়ের চিন্তা কি করে সেই মেয়েকে পড়াশোনা করাবেন বা কি করে বিয়ে দেবেন। কন্যা সন্তানকে যাতে আর বোঝা না বলে মনে হয় তার জন্য বারবার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে এসেছেন রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকার উভয়েই। কন্যাদায় গ্রস্থ পিতাদের যাতে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বসান্ত না হতে হয়, সেই উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছিল রূপশ্রী নামে একটি প্রকল্প।
রূপশ্রী প্রকল্প কি?
২০১৮ সালে ২৮ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদনে রূপশ্রী প্রকল্পটি চালু করা হয়, যে প্রকল্পের অধীনে প্রাপ্তবয়স্ক যে কোন মেয়েকে বিয়ের সময় আর্থিক সহায়তা করা হয়। রূপশ্রী প্রকল্পের আওতায় বিয়ের আগে আবেদন করলে পাওয়া যায় ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু এই আবেদন কি করে করতে হবে বা কি কি নিয়ম পালন করা উচিত সেটাই আমরা জেনে নেব এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইন বা অফলাইন দুভাবেই আবেদন করা যায় রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য। অনলাইনে আবেদন করতে হলে আপনাকে নারী ও শিশু কল্যাণ এবং সুরক্ষা মন্ত্রকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে http://www.wbcdwdsw.gov.in লিংকে ক্লিক করলেই হোম পেজ খুলে যাবে। এরপর মেনু বারে ৮ নম্বর অপশনে গিয়ে ফর্মে ক্লিক করতে হবে। বেছে নিতে হবে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম অফ রূপশ্রী প্রকল্প। ক্লিক করতে হবে ওপেন নাও অপশনে। রূপশ্রী ফর্মটি প্রিন্ট করে নিকটবর্তী ব্লক অফিস, সাবডিভিশন অফিস অথবা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের কমিশনের অফিসে জমা করতে হবে।
অফলাইনে কিভাবে আবেদন করবেন রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য
অফলাইনে ফর্ম পেতে হলে গ্রামীন এলাকার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের অফিস, মিউনিসিপাল এলাকার জন্য সাব ডিভিশন অফিসারের অফিস, কর্পোরেশন এলাকার জন্য কমিশনের অফিস অথবা ওয়ার্ড অফিসে গিয়ে ফর্ম তুলে আনতে হবে। আবেদন পত্রটি ভালো করে ফিলাপ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র এবং শংসাপত্র সমেত তার জমা করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিস, মিউনিসিপাল কর্পোরেশন অথবা সাব ডিভিশন অফিসে।
রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য কি কি জমা করতে হবে
আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা করতে হবে আবেদনকারীর জন্মের শংসাপত্র, ভোটার আইডেন্টিটি কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, সরকার অনুমোদিত বিদ্যালয় ছাড়ার শংসাপত্র এবং দু কপি ফটো। আবেদনকারী যে আগে কখনো বিয়ে করেননি, সেই মর্মে একটি চিঠি লিখেও জমা করতে হবে। আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয় যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার কম, তারও একটি চিঠি দিতে হবে। আবেদনকারীর যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে তার প্রথম পাতার একটি ফটোকপি জমা করতে হবে যেখানে লেখা থাকবে অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফসি কোড, এমআইসিআর কোড।
আরও পড়ুন : ১৫০০০ টাকায় শুরু করুন ব্যবসা, মাসে কামাবেন ৩ লক্ষ টাকা, জানুন কীভাবে
আবেদনকারী যে সত্যি বিয়ে করতে চলেছেন তারও প্রমাণপত্র দিতে হবে। বিয়ের প্রমাণ সূচক হিসাবে বিয়ের নিমন্ত্রণের কার্ড, ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশনের নোটিশ জমা দিতে হবে। যার সঙ্গে বিয়ে হতে চলেছে অর্থাৎ পাত্রের জন্মের শংসাপত্র, ভোটার আইডেন্টিটি কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডের ফটোকপি, দু কপি ছবি জমা করতে হবে।
আরও পড়ুন : হু হু করে কমবে পেট্রোল-ডিজেলের দাম, বড় সুখবর শোনাল কেন্দ্রীয় সরকার
রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য কিভাবে ফর্ম ফিলাপ করবেন
ফর্ম ফিলাপ করার সময় অবশ্যই আবেদনকারীর নাম, জন্মের তারিখ, মা বাবার নাম, বিয়ের সম্ভাব্য তারিখ লিখতে হবে। দিতে হবে স্থায়ী ঠিকানা, অবশ্যই লিখতে হবে বাড়ির নম্বর, রাস্তা, পোস্ট অফিস, গ্রাম পঞ্চায়েত ব্লক বা কোন মিউনিসিপালিটি সেটি উল্লেখ করে দিতে হবে। এরপর পর পর দিতে হবে জেলা, রাজ্য, আবেদনকারীর পিন কোড এবং মোবাইল নম্বর। শিক্ষাগত যোগ্যতা, জাতি এবং ধর্ম উল্লেখ করতে হবে। সবশেষে তারিখসহ সই করে সমস্ত নথি একসঙ্গে যোগ করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন : ৩১শে ডিসেম্বরের আগেই সেরে নিন আধার, FD এবং ব্যাঙ্কের এই কাজগুলো, না হলে পড়বেন সমস্যায়