Chiranjeet Chakraborty Real Name : চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty), নামটার সঙ্গে পরিচিত গোটা বাংলা। ৯০ এর দশকের গোড়াতে সিনেমা জগতে আবির্ভাব হয়েছিল তার। এরপর একাধিক ছবিতে নায়কের ভূমিকাতে অভিনয় করেছেন। বেশ কিছু ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করেছেন। চিরঞ্জিত মানেই বাংলা সিনেমার সুপারস্টার। তবে তার আসল নাম কিন্তু এটা নয়। চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর আসল নাম কী ছিল? কেনই বা নিজের নাম বদলেছিলেন অভিনেতা?
Chiranjeet Chakraborty Real Name
সম্প্রতি আজতক বাংলার কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে চিরঞ্জিত মুখ খোলেন তার পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে। সেখানেই চিরঞ্জিত জানান দীপক চক্রবর্তী থেকে চিরঞ্জিত হয়ে ওঠার গল্প। হ্যাঁ, চিরঞ্জিতের আসল নাম দীপক চক্রবর্তী (Deepak Chakraborty)। উত্তম কুমারের পর তিনিই বাংলার একমাত্র সুপারস্টার যিনি নিজের নাম পরিবর্তন করেন। তিনি যে তার নাম বদলেছিলেন এর নেপথ্যে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর আসল নাম কী?
অভিনেতা নিজেই দীপক থেকে নিজের নতুন নাম রাখেন চিরঞ্জিত। নামের অর্থ ‘চির রঞ্জিত’। চিরঞ্জিত কথার অর্থ বহু বর্ণীল। যার একটা রূপ নয়, একাধিক রূপ রয়েছে। যার নানা রং, নানা চেহারা, নানা মেকআপ, সিনেমার অভিনেতার ক্ষেত্রে বলতে গেলে নামটা একেবারেই যথাযথ। আসলে অভিনেতাকে একজন জ্যোতিষী বলেছিলেন ‘চ’ দিয়ে তার নাম রাখা উচিত। তাই এই নামটাই তার পছন্দ হয়।
কেন নিজের নাম বদলেছেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী?
অবশ্য শুধু জ্যোতিষ কারণ নয়, নাম পাল্টে ফেলার ক্ষেত্রে আরও অনেক কিছু ভাবনা চিন্তা করেছিলেন চিরঞ্জিত। চিরঞ্জিত আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন পরিচালক হতে। কিন্তু সাংসারিক মাল মশলাযুক্ত বাণিজ্যিক ছবির নায়ক হিসেবে তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেন। একটা সময় ছিল যখন মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়দের মত পরিচালকরা চিরঞ্জিতকে তাদের ছবিতে নিতে চাননি। এমতাবস্থায় চিরঞ্জিত তার দুটো সত্ত্বা গড়তে চেয়েছিলেন।
চিরঞ্জিত হিসেবে তিনি মানুষের মনে দাগ কেটেছিলেন বাণিজ্যিক ছবির দরুণ। যেগুলো তার ভাষায় ‘পচা ছবি’। তবে অ্যাওয়ার্ড উইনিং ছবি যেগুলো, সেখানে কাজ করলে তিনি দীপক চক্রবর্তী অর্থাৎ নিজের আসল নামে পরিচিত হতে চেয়েছিলেন। একটা উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন যদি বলিউড অভিনেতা জিতেন্দ্র ‘পথের পাঁচালী’ পরিচালনা করে ক্যামেরার সামনে জলের উপর পোকা ঘুরছে দেখাতেন তাহলে সমালোচনার শেষ থাকত না।
ঠিক একইভাবে এই ধরনের আর্ট ফিল্ম বা অ্যাওয়ার্ডের জন্য যে ছবিগুলো বানানো হয় তাতে চিরঞ্জিত নামটা দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে চাইতেন না বা ঘোরতর নেগেটিভ সমালোচনা হত। দুই আলাদা আলাদা ‘জনেরা’র কাজের জন্য তাই চিরঞ্জিত নিজের দুই আলাদা সত্ত্বা রাখতে চেয়েছিলেন যাতে মানুষ গুলিয়ে না ফেলে। যিনি ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’, ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে’, ‘বস্তির মেয়ে রাধা’র মত সিনেমা করেছেন তিনি যে ‘চতুষ্কোণ’, ‘অবৈধ’, ‘ষড়রিপু’, ‘বাড়িওয়ালি’র মত সিনেমাও করতে পারেন, অভিনয়ের জগতে নিজের সেই দুই আলাদা সত্ত্বা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন চিরঞ্জিত।
আরও পড়ুন : বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সেরা ১০ ডায়লগ, শুনলে হেসে কুটোপাটি খাবেন
যদিও চিরঞ্জিতের এই ইচ্ছেটা পূরণ হয়নি। তার কারণ খোদ তার নতুন নামটিই। চিরঞ্জিত নামটা এত বেশি জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় মানুষের কাছে যে দীপক নামের অস্তিত্বই আর থাকেনি। এখন বাণিজ্যিক ছবি হোক বা আলাদা ঘরানা, চিরঞ্জিত নামটাই যথেষ্ট দর্শককে হলে টানার জন্য। পরিচালকরাও তাই পরবর্তী দিনে প্রত্যেকটি ছবিতে চিরঞ্জিত নামটাই ব্যবহার করেছেন।