আমাদের ভারতবর্ষে ব্লু ফিল্ম বা পর্নোগ্রাফি দেখানো একেবারেই নিষিদ্ধ। কয়েক বছর আগেও আপনি বিভিন্ন সাইট থেকে ব্লু ফিল্ম (Blue Film) ডাউনলোড করে দেখতে পারতেন কিন্তু এখন ভারতবর্ষে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই পর্নোগ্রাফি। আমাদের ভারতবর্ষের যৌনতা বা সেক্স এডুকেশন নিয়ে একাধিকবার করা হলেও তা এখনো পুরোপুরিভাবে মান্যতা পায়নি। যদিও সেক্স এডুকেশন নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সিনেমা তৈরি করা হয়েছে।
১৯৮০ দশকের শেষের দিকে ভিএইচএস প্রযুক্তি আসার পর ভারতীয়রা প্রথম পর্নোগ্রাফির স্বাদ পায়। অনেক সময় বি গ্রেড সিনেমাকেও এই পর্নোগ্রাফি সিনেমার তালিকায় রাখা হতো। দুপুরের শো বা অনেক সময় গভীর রাতের শোতে রাখা হতো এই বি গ্রেড সিনেমা গুলিকে। তবে যে ব্লু ফিল্ম বা পর্নোগ্রাফি কথাটির সঙ্গে আমরা ভীষণ পরিচিত সেই ব্লু ফিল্ম কথাটি কোথা থেকে এসেছে জানেন?
এই ব্লু ফিল্ম কথাটি কোথা থেকে এসেছে তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও বেশ কয়েকটি বিষয় ছিল যা থেকে এই ব্লু ফিল্ম কথাটি আসতে পারে। অনেকে মনে করেন, ভারতে যখন স্বল্প বাজেট ছবির পোস্টার ছাপানো হতো তখন নীল সাদা রঙে সেটি ছাপানো হতো তাই এগুলির নাম ব্লু ফিল্ম বলা হত। আবার অনেকে মনে করেন, সস্তার ছবি তৈরি করার সময় পরিচালকরা কম দামে ড্যামেজ রিল কিনতেন আর সেগুলি বেশিরভাগ নীলচে রঙের হতো তাই সেখান থেকেও এই নামটি আসতে পারে।
অনেকে আবার মনে করতেন, ১৯৮০ দশকে সাধারণ ভিডিও ক্যাসেটের থেকে পর্নোগ্রাফি ক্যাসেটকে আলাদা করে রাখার জন্য সেগুলিকে নীল রঙের খাপে ঢুকিয়ে রাখা হতো আর তাই সেখান থেকে এই ব্লু ফিল্ম কথাটি এসেছে। তবে এই বিষয়গুলি যুক্তিগ্রাহ্য হলেও এটি কোনোটিই আসল কারণ নয়। আসল কারণটি হল,এই ব্লু কথাটি এসেছে মূলত নীল আইন কথা থেকে। এই আইনটি প্রণয়ন করেছিলেন রেভারেন্ড স্যামুয়েল পিটার্স। অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইনটির উদ্দেশ্য ছিল রবিবার বা ছুটির দিন কিছু বিষয়কে নিয়ন্ত্রণ করা।
রবিবার অর্থাৎ ছুটির দিন মদ কেনা এবং খাওয়া, পতিতালয়ে যাওয়া সহ আরো বেশ কিছু কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করা হয়। আসলে রেফারেন্ড চেয়েছিলেন, রবিবার যাতে সবাই শুদ্ধ মনে গির্জায় গিয়ে নিজেকে ঈশ্বরের কাছে নিয়োজিত করতে পারেন। একটি দিন যাতে মানুষ সমস্ত লোভনীয় জিনিস থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে শুদ্ধ চিত্তে ঈশ্বরের আরাধনা করতে পারেন তাই এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল।
জানা যায়, এই আইনটি নীল কাগজ বা নীল-মলাটে মোড়া একটি খাতায় লেখা হয়েছিল তাই এই আইনটিকে বলা হয় ব্লু ল বা নীল আইন। এই আইনটি আজ থেকে ৫০ বছর আগে মার্কিন স্টেটে প্রচলিত ছিল আর এই আইনের নাম অনুসারেই পর্নোগ্রাফির নাম হয়ে যায় ব্লু ফিল্ম। তখন থেকেই সারা বিশ্ব জুড়ে পর্নোগ্রাফিকে ব্লু ফিল্ম বলে ডাকা হয়।