গত বছর শুরু হওয়া এসএসসি দুর্নীতি কান্ড যত এগোচ্ছে তত নতুন নতুন মোড় নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজেদের চাকরি হারিয়েছেন। যোগ্যতা ছাড়াও যারা শিক্ষক পদে নিয়োগ হয়েছিলেন, তাদের করা হয়েছে বরখাস্ত। সামনে উঠে এসেছে একের পর এক দুর্নীতি। এবার এই এসএসসি মামলায় আরো একটি বড় পদক্ষেপ নিলেন কলকাতা হাইকোর্ট।
২০২২ সালের মে মাসে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এই কেলেঙ্কারির কথা সামনে উঠে আসে। উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ছিলেন প্রাক্তন সিবিআই অফিসার। এই কেলেঙ্কারির কথা সামনে উঠে আসার পর ২০২২ সালের ২৩ জুলাই বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়।
শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় কেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একাধিক ঘনিষ্ঠকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং উদ্ধার করা হয় কোটি কোটি টাকা। এসএসসি নিয়োগ মামলা থেকে যে গল্প শুরু হয়েছিল তা গরু পাচার মামলা, রেশন দুর্নীতি সহ আরো বেশ কিছু পথে এগিয়ে গেছে। এবার ২০১৬ সালে চাকরিপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট আরো একটি বড় পদক্ষেপ নিলেন।
কারা কারা চিঠি পাবেন? জানিয়ে রাখি, ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যারা চাকরি পেয়েছেন অর্থাৎ গ্রুপ সি গ্রুপ ডি নবম দশম এবং একাদশ দ্বাদশের সমস্ত শিক্ষক অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে মোট ২৩ হাজার ৫৪৯ জন কর্মীদের চিঠি পাঠানো হবে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে। এই নোটিশে লেখা থাকবে, মামলা সম্পর্কে যদি চাকরি প্রাপকদের কোন কথা বলার থাকে তাহলে যেন তারা আদালতে এসে তা বলে যান।
আরও পড়ুন : প্রতিমাসে রোজগার হবে ৯২৫০ টাকা, পোস্ট অফিসে স্বামী-স্ত্রী এইভাবে খুলুন অ্যাকাউন্ট
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে এসএসসি নিয়োগে যারা চাকরি পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে গ্রুপ ডি বিভাগে রয়েছেন ২০৩৭ জন, গ্রুপ সি বিভাগে ৪৪৮৭ জন, নবম দশম বিভাগে রয়েছেন ১১,৫২৫ জন, একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীতে রয়েছেন ৫,৫০০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মী। মনে করা হচ্ছে, ২০১৬ সালেই হয়েছিল চরম অনিয়ম। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে যখন কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে এই কেলেঙ্কারি তদন্তের দায়িত্ব নেবার নির্দেশ দেয়, তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার ডিভিশন বেঞ্চের কাছে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন যা আদালত প্রত্যাখ্যান করে দেন।
আরও পড়ুন : প্রাইমারি টেট নিয়ে চরম দুঃসংবাদ, ৫৫ হাজার হবু শিক্ষকের জন্য বড় ঘোষণা করল পর্ষদ
এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের অধীনে ২০২২ সাল থেকে সিবিআই এই তদন্ত প্রক্রিয়া ফের শুরু করেন এবং পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালান। বর্তমানে এই তদন্তের নিরিখে উঠে এসেছে বহু নেতা-মন্ত্রীদের নাম। বরখাস্ত করা হয়েছে একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের। তবে এই চিঠি পাঠানোর পর আরো কি কি কেলেঙ্কারি সামনে উঠে আসে, আরো কত শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজেদের চাকরি হারান, সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন : ভারতের এই ৫ জায়গায় পোশাক পরা নিষিদ্ধ, পোশাক ছাড়াই ঘোরাফেরা করেন পুরুষ-মহিলা