ভারতবর্ষের মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে রীতিমতো জেরবার হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিনের সবজি থেকে শুরু করে মাছ মাংস সব কিছুরই এখন আকাশ ছোঁয়া দাম। এই উর্ধ্বমুখী বাজারদরের মধ্যে রয়েছে পেট্রোল এবং ডিজেল।জ্বালানি এখন আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে,তাই আমরা পারি কি না পারি আমাদের কিনতেই হয় এই জ্বালানি। এই বাড়তে থাকা জ্বালানির দাম মেটাতে গিয়ে যখন হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ, ঠিক তখনই শোনা গেল একটি বড় খবর।
এখন দেশের জনসংখ্যার থেকে অধিক সংখ্যক গাড়ি দেখতে পাওয়া যায় ভারতবর্ষে। প্রত্যেক বাড়িতে সাইকেল তো বটেই, একাধিক মোটরসাইকেল এবং স্কুটি থাকাও ভীষণ স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু তাই নয়, মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত মানুষের মধ্যেই এখন চারচাকা কেনারও একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভীষণভাবে। তবে শুধু কিনলেই হল না, দুই চাকা হোক অথবা চার চাকা, গাড়ি চালাতে প্রয়োজন হয় জ্বালানির। আর এই জ্বালানির মূল্য হলো আকাশ ছোঁয়া।
বাড়তে থাকা জ্বালানির দামের সঙ্গে পাল্লা না দিতে পেরে অনেকেই আছেন যারা গাড়ি কিনে শুধু বাড়িতে সাজিয়ে রেখে দিচ্ছেন বা অনেকেই আছেন যারা কম মূলের বিনিময়ে নিজেদের গাড়ি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। গত বছরের এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত ডিজেল এবং পেট্রোলের দামে কোন পরিবর্তন হয়নি ঠিকই, তবে আশা করা হচ্ছে এবার পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, টানা তিন বছর পর অবশেষে ভেনেজুয়েলা থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে চলেছে ভারত। ল্যাটিন আমেরিকার এই দেশের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তা অবশেষে শিথিল হতে চলেছে, আর তাই এবার ভারতের কাছে অপরিশোধিত তেল আমদানির পথ আরো বেশি মসৃণ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ভেনেজুয়েলা থেকে তিনটি ট্যাঙ্কার বুক করেছে, যেগুলি আগামী বছরের ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে চলে আসবে ভারতে।
আরও পড়ুন : প্রতিমাসে রোজগার হবে ৯২৫০ টাকা, পোস্ট অফিসে স্বামী-স্ত্রী এইভাবে খুলুন অ্যাকাউন্ট
কমোডিটি মার্কেট এ্যানালিটিক্স ফার্ম কেপিএলারের তথ্য অনুযায়ী,২০১৯ সালে ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ হিসেবে পরিগণিত ছিল। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ভারত সর্বশেষ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছিল ভেনেজুয়েলা থেকে। ওই বছর ১৬ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হয়েছিল ভারতবর্ষে। ২০২০ সালের শেষ দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় চিত্রটা পাল্টে যায়। তবে ফের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়ে যাবার ফলে এবার থেকে ছয় মাসের জন্য কোন সীমা ছাড়াই অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করতে সক্ষম হবে ভেনেজুয়েলা।
আরও পড়ুন : ভোটের আগে বড় ঝটকা, আগামী মাসেই লাগু হবে অষ্টম পে কমিশন? জানালো কেন্দ্র
রিপোর্ট অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ইতিমধ্যেই তিনটি সুপার ট্যাঙ্কার বুক করেছে যার ২৭০,০০০ টন অপরিশোধিত তেল বহন করা যায়। এই ট্যাঙ্কার দুটির একটি আগামী সপ্তাহে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে ভারতবর্ষে পৌঁছাবে। প্রসঙ্গত, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে জ্বালানির দাম ১৩৯ ডলারে পৌঁছেছিল। যেহেতু ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেলের আমদানি কারক দেশ, তাই স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ভারতকে। প্রতিবছর দেশে ব্যবহৃত জ্বালানির ৮৫%- এরও বেশি আমদানি করা হয় বাইরের দেশ গুলি থেকে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং ভেনেজুয়েলার উপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতে জ্বালানি আমদানির যে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, তা ফের মসৃণ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ভারত সেরা ১০ রেস্তোরাঁর শীর্ষে কলকাতাও! জানুন কোন কোন রেস্টুরেন্ট রয়েছে এই তালিকায়